সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং যে সকল কাজ গুলো সাধারণত করে থাকেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরির কর্মক্ষেত্র সমূহ ও পড়াশোনা
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং যে সকল কাজ গুলো সাধারণত করে থাকেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারা সাধারণত নির্মাণ কাজের প্রোজেক্ট এর পরিকল্পনা, ডিজাইন, কাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকে। যে কোন প্রোজেক্ট এর কাজ শুরু করতে হলে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার প্রোজেক্ট এর জন্য জরিপের কাজ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এমনি কি প্রোজেক্ট ব্যাবস্থাপক এর কাজও করে থাকে। ইঞ্জিনিয়ারিং জগতে সবচেয়ে পুরাতন প্রকৌশল বিজ্ঞান হল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। এই জন্য পুরকৈশলকে সকল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মা বলা হয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাবহারিক প্রযোগ।
যে কোন দেশে প্রায় যত গুলো বড় বড় প্রোজেক্ট এর কাজ সরকার করে থাকেন। তার বেশির ভাগ প্রোজেক্ট এর কাজ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারাই করে থাকে। যেমন, রাস্তা নির্মাণের কাজ, সেতু বা ব্রীজের কাজ, রেলওয়ের কাজ, পানি ও নদী গবেষণার কাজ, পরিবেশ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ, বন ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের কাজ, নদী বাঁধ রক্ষার কাজ, আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ, আবহাওয়া, এছাড়া আরো অনেক প্রোজেক্ট এর কাজ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা করা হয়। এছাড়া বাড়ির বা বিল্ডিং নির্মাণের কাজ এমনি পারমাণবিক বিদ্যুৎ তৈরি প্রোজেক্ট এর জন্যও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের প্রযোজন হয়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি চাকরির কর্মক্ষেত্র সমূহ।
১) গণপূর্ত অধিদপ্তর।
২) সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।
৩) সেচ অধিদপ্তর।
৪) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
৫) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বাের্ড।
৬) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বাের্ড।
৭) ঢাকা ওয়াসা।
৮) হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন।
৯) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
১০) শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
১২) ডাক ও টেলিযােগাযােগ মন্ত্রণালয়।
১৩) প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
১৪) দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
১৫) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় অধিদপ্তর।
১৬) বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)।
১৭) বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)।
১৮) সার্ভে অব বাংলাদেশ।
১৯) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
২০) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ইত্যাদি আরো ও অনেক আছে......
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের স্বায়ত্তশাসিত সরকারি কর্মক্ষেত্র সমূহ।
১) তিতাস গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
২) জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
৩) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
৪) ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড।
৫) নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড।
৬) ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ।
৭) পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি বাংলাদেশ আরো ও অনেক আছে......
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের বেসরকারি কর্মক্ষেত্র সমূহ।
১) মিস্টিক ষ্টীল বিল্ডিংস।
২) জেকে কন্ট্রাকশন ফার্ম ।
৩) ফেয়ার টেক ষ্টীল বিন্ডিংস।
৪) ডট ষ্টীল লিমিটেড।
৫) বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী কন্সট্রাকশন ফার্ম গুলােতে আরও অনেক আছে....
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং টাকা উপার্জনের ১৪ টি উপায়।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সাতটি বিভাগ নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা।
১।স্ট্রাকচারাল (Structural Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
২।কন্সট্রকশন (Construction Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
৩।ট্রান্সপোর্টেশন (Transportation Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
৪।জিওটেকনিক্যাল (Geo technical Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
৫।এনভায়রনমেন্ট (Environmental Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
৬।আরবান এবং কমিনিটা প্লানিং (Urban and Community Planning Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
৭।ওয়াটার রিসোর্স (Water Resource Civil Engineering) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
১।স্ট্রাকচারাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
সেতু বা ব্রীজ, কালভ্রাট, টাওয়ার, বাড়ি, বিল্ডিং ইত্যাদি নির্মাণের পুর্বে এগুলো উপর নিজস্ব ভার বহন বা ভার প্রতিরোধ ক্ষমতাসহ বাতাস, পানি, ভূমিকম্প, তাপমাত্রা এই সমস্যা থেকে রক্ষার জন্য হিসাব নিকাশ করে কাঠামো বা নকশা তৈরি করাই হল স্ট্রাকচারাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ।
২।কন্সট্রকশন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
স্ট্রাকচারাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সে নকশা বা ডিজাইন করে থাকেন। সেই ডিজাইন অনুসারে কন্সট্রকশন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিমেন্ট, বালি, রি-ইনফোর্সমেন্ট, কাঠ, ও অন্যন্য মালামাল যন্তপাতি মিলে সঠিক ভাবে কাঠামো তৈরি করে প্রোজেক্ট বাস্তবায়ন করাই হল কন্সট্রকশন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ।
৩।ট্রান্সপোর্টেশন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
যে কোন দেশেকে উন্নতি ও আধুনিক ভাবে গড়ে তুলতে হলে। যে সমস্যাটা সামনে আসে, সেটা হল যোগাযোগ ব্যাবস্থার সমস্যা। তাই ট্রান্সপোর্টেশন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ হল, ব্রীজ, কালভ্রাট, রাস্তা, রেলওয়ে, বিমান বন্দর, ইত্যাদির ডিজাইন ও গবেষণা করে নিরাপদ এবং দুর্ঘটনা মুক্ত যোগাযোগ ব্যাবস্থা করা।
৪।জিওটেকনিক্যাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রায় বেশির ভাগ বিভাগে জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রযোজন হয়। কারণ যে কোন নির্মাণ কাজ শুরু করতে হয় ভুমির উপরে।আর সেই ভুমির ভৌগোলি অবস্থা, মাটির ভূ-গর্ভের সিপেজ, ভূমিকম্পের প্রভাব, স্থিতিশিলতা, মাটি পরিক্ষা, ইত্যাদি নিয়ে জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ কাজ করেন। এছাড়া নদীর বাঁধ, রিটেইনিং দেওয়াল, ফাউন্ডেশন ইত্যাদির আংশিক ডিজাইন করেন জিওটেকনিক্যাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
৫।এনভায়রনমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
পৃথিবীতে যে কোন প্রাণীকে সুস্থ ভাবে বেচে থাকতে হলে সুন্দর অনুকূল পরিবেশের প্রযোজন হয়। আর এনভায়রনমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সকল প্রকার প্রাণীকে সুন্দর ভাবে জীবন ধারণের জন্য সেই পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করে থাকেন। এনভায়রনমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পানি দূষণ, বায়ু দূষণ, বর্জ্য মল মূত্র ইত্যাদি অপসারণ এবং বিশুদ করণ নিয়ে কাজ করে থাকেন।
৬।আরবান এবং কমিনিটা প্লানিং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
একটি শহর বা নগরকে কিভাবে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হয়। সেই সকল বিষয়ে আরবান এবং কমিনিটা প্লানিং সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা পূর্বে থেকে পরিকল্পনা করে থাকেন। শহরে স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা, মসজিদ, মুন্দির, গির্জা, খেলার মাঠ, পার্ক, হোটেল, মার্কেট ইত্যাদি কোথায় কিভাবে হবে। সেটা আরবান এবং কমিনিটা প্লানিং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নির্ধারণ করে থাকেন।
৭।ওয়াটার রিসোর্স সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
পানির অপর নাম জীবন, এটা একটি সাধারণ কথা আমরা সবাই জানি। আবার এই পানি দুষিত হয়ে আমাদের মরণও ডেকে অনতে পারে। পানি সম্পদ প্রকৌশল পানির ভৌত অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে। ওয়াটার রিসোর্স সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বন্যা, শহরের- কারখানা, সেচ পানি সরবরাহ, নদী ভাঙ্গন রোধ, নদী শাষন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ছাড়া হাইড্রলিক পাওয়ার, বাঁধ, খাল, ইত্যাদির নির্মাণের জন্য ডিজাইনও করে থাকেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরির জন্য পূর্ব প্রস্তুতি।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যায়ন রত ছাত্ররা ভর্তি হয়েই ভাবেন যে তিনি খুব শিঘ্রই এক জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাবেন। কিন্তু এক বছর যেতেই তাদের চোখের উপর থেকে পর্দা সরে যায়। তারা বুঝতে শুরু করেন যে তারা তাদের জীবনে কি ভুলটাই না করছেন। আর যারা বুঝতে পারেন না তারা ভাবেন যেমন চলছে চলুক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষে নিশ্চিত চাকরি হবেই।
অনেকের ধারণা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পার্শ করলেই চাকরি পাওয়া যায় তবে বাস্তবতা এত সহজ নয়। ভাল ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকায় প্রায় বেশির ভাগ ছাত্র, যে কোন ইঞ্জিনিয়ারিং পার্শ করেও বেকার হয়ে বসে আছে।
তাই আপনাদের নিকট আগাম সতর্কবার্তা যে আপনারা আগে থেকেই সাবধান হয়ে যান, আর নিজের ক্যারিয়ার গড়ার প্রতি নিজে সচেতন হন। ইন্টানিং এর আগেই শিখে ফেলুন আপনার বিষয় ভিত্তিক প্রাক্টিক্যাল কাজ। তাহলে চাকরি আর অপর কহে সােনার হরিণ হবে না, আর ঘরে বসে দিতে হবে না বয়স্ক বাবা-মাকে কষ্ট, আর খেতে হবে না গালমন্দ।
ফার্স্ট ইয়ার ডােন্ট কেয়ার।
এরূপ চিন্তা ভাবনা মন থেকে মুছে ফেলুন। দেখবেন শুরু থেকেই টাকা উপার্জন করতে শিখেছেন। কারণ আমাদের মধ্য অনেক ব্যাচমেট দেখা যায়, প্রথম এক বছরে অটোক্যাড ড্রয়িং শিখে দ্বিতীয় বছর থেকেই উপার্জনের সাথে সমপৃক্ত হয়েছেন। কারন তারা জানে ইঞ্জিনিয়ারিং শিখে কিভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
চাকুরি বা টাকা উপার্জন এতাে সহজ নয়। এখন ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার রেজাল্টকে যতটা জানতে চায়। তার চেয়ে আপনি কি কি কাজ পারেন বা ব্যাবহারিক কাজ এর অভিজ্ঞতা কতটুকু সেটাই বেশি যাচাই করা হয়। তাই নিজেকে আগে ভাগেই চাকুরির যােগ্য করে গড়ে তুলুন।
কিভাবে আপনি একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন।
এখানে এক জন কন্সট্রকশন ও স্ট্রাকচারাল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হতে হলে। যে সকল গুনগুলো আপনার মধ্য থাকা উচিত সে গুলো নিম্নে দেওয়া হল।
১। আপনাকে প্রথমে অবশ্যই প্রফেশোনাল ভাবে অটোক্যাড শিখতে হবে। যদি অটোক্যাড শিখতে না পারেন তাহলে মনে রাখবেন। আপনি কখনো পরিপুন্য এক ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবেন না।কারণ একজন প্রকৌশলীর ড্রয়িং করতে অবশ্যই জানতে হবে। আর অটোক্যাডে ড্রয়িং করতে পারলে। আপনার চাকরি পাওয়ার সুযোগ অনেক গুন বেড়ে যাবে।
২। বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন সাইটের কাজ গুলাে পর্যবেক্ষণ করবেন। কনস্ট্রাকশন সাইটে অনেক ফোরম্যান কাজ করে যাদের ড্রয়িং সম্পকে ভাল অভিজ্ঞতা আছে বা বােঝে তাদের কাছ থেকে সহযােগিতা নিতে পারেন।
৩। তারপর যেটা করতে হবে সেটা হলাে এস্টিমেট। এস্টিমেট অনেক সহজ একটা বিষয়। ড্রয়িং এর বিস্তারিত তথ্য ভালভাবে বুঝলে এস্টিমেট করা সহজ হবে। অটোক্যাড জানা থাকলে ড্রয়িং বােঝা আরও সহজ হবে।
৪। ড্রয়িং হাতে পাওয়ার পর নিজে একবার চোখ বুলিয়ে নিন। যে বিষয়গুলাে বুঝা কষ্টকর সেগুলাে দাগিয়ে রাখুন। তারপর সেগুলাে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবেন। প্রয়ােজনে ড্রয়িং এর ফটোকপি তুলে নিয়ে পাশের বড় ভাই, বন্ধু বা কম্পানির সিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে যােগাযােগ করতে পারেন।
৫। ড্রয়িং নিজের কালেকশনে রাখুন এবং নিজের শখে পরিণত করুন।
৬। আপনার ডির্পাটমেন্ট এর কাজ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখুন। পেশা জীবনে নিজেদেরকে কি কি কাজ করতে হয় সে বিষয়ে খোঁজ খবর রাখুন।
৭। আপনার আশে পাশে নিজেদের টেকনােলজি সম্পর্কিত যেসব কাজ হচ্ছে সেগুলাে দেখুন। প্রয়ােজনে মিস্ত্রিদের কাছ থেকে উক্ত কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। কত ডায়ার রড কি পরিমাণ ব্যবহার করা হচ্ছে, টাই/স্টিরাপ এর স্পেশিং কোন জায়গায় কত, বিম ও কলামের সাইজ, মাটির উপরে ও নিচে ক্লিয়ার কভার কত ইত্যাদি।
একজন দক্ষ প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারের কি কি কাজ করতে হয়।
১। প্রোজেক্ট ড্রয়িং ডিজাইন সংগ্রহ করতে হবে এবং সেই অনুসারে কাজ শুরু করতে হবে।
২। আর্কিটেচারাল ও স্ট্রাকচারাল ডিজাইন মিলিয়ে দেখতে হবে। কোন সমস্যা থাকলে ডিজাইনারকে জানাতে হবে।
৩। সাইটে কোন মালামাল আসলে তার গুনগত মান ঠিক আছে কি না সেটা প্রথমিক ভাবে পরিক্ষা করে দেখতে হবে।কোন রকম সমস্যা থাকলে অফিসে জানাতে হবে।
৪। সাইটে কোন মালামাল প্রয়ােজন হলে আগে থেকে রিকুয়িজেশন দিতে হবে।
৫। মালামাল যেমন, পাথর, সিলেট বালি, লােকাল বালি, খােয়া, ইট, রড ডায়া | অনুযায়ী পৃথক পৃথক ভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে।
৬। সাইটের ইলেকট্রিক তারের লাইন নিরাপদ স্থান দিয়ে নিতে হবে এবং সাইট পরিষ্কার ও গোছালো ভাবে রাখতে হবে।
৭। স্যানিটারী ও পানির পাইপ লাইনে কোন সমস্যা আছে কি না সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে।
৮। ইলেক্ট্রিক তার লাগানাের সময় আর এম অনুসারে দেওয়া হচ্ছে কি না চেক করতে হবে। যেমন এসি ৩/৪ আর এম। পাওয়ার পয়েন্ট ৩/২.৫ আর এম। লাইট ও ফ্যান পয়েন্ট ১.৫ আর এম ইত্যাদি।
৯। সাইটে নিজেদের জন্য সাইট অফিস রুম ও মালামাল রাখার জন্য গােডাউন তৈরী করতে হবে।
১০। রড কাটার আগে সাইটের ফোরম্যান ও হেড মিস্ত্রি সহ মিটিং করতে হবে যেন রড়ের টুকরা কম হয়। রডের অপ্রয়ােজনীয় টুকরাগুলাে গুছিয়ে গােডাউনে রাখতে হবে।
১১। সিমেন্ট রাখার জন্য উঁচু স্থানে ভাল গোডাউন রুম তৈরি করতে হবে। যাতে করে সিমেন্টের সংপর্শে পানি আসতে না পারে।এবং সিমেন্ট নষ্ট না হয়।
১২। ইটের গাথুনি, প্লাষ্টার, কলাম, শেয়ার ওয়াল, লিফটের ওয়াল এছাড়া জানালা-দরজার চৌকাঠ, গ্রীল ও সিড়ির রেলিং এ সকল ভার্টিক্যাল কাঠামােগুলােকে ওয়াটার লেভেল ও সল-সুতা দ্বারা ভাল ভাবে চেক করতে হবে।
১৩। সকল ফিটিং সেট করার আগে উচ্চতা চেক করতে হবে। যেমন, সুইচ বাের্ড, লাইট পয়েন্ট, পাওয়ার পয়েন্ট, বিব কর্ক ও কনসিল স্টপ কর্ক।
১৪। টাইলস লাগানাের আগে, লাইট পয়েন্ট, ওয়াস্ট ওয়াটার লাইন, কমড লাইন, বেসিন লাইন, পাইপ লাইন ও লাইনের পেসার চেক করে নিতে হবে।
১৫। রঙ করার আগে রং সিলেকশন করতে হবে। কোন রুমে কি রং হবে। ভাল ভাবে ঘষা হয়েছে কি না। পুটি ঠিক ভাবে মিক্স ও লাগাতে হবে। এছাড়া প্রথম কোট, দ্বিতীয় কোট, ফাইনাল কোট শেষে চেক করতে হবে।
নির্মাণ প্রজেক্ট শুরুর পুর্বে যে কাজ গুলো অবশ্যই করণীয়।
গাছপালা কাটা।
নির্মাণ সাইটের পাশে এবং ভেতরে গাছপালা থাকলে কাটে ফেলতে হবে। কারণ গাছের শিকড় প্রজেক্টের ভেতরে কাঠামাের ক্ষতি করতে পারে।
বাউন্ডারী ওয়াল।
সাইটের নিরাপত্তার জন্য প্রজেক্টের চার পাশে শক্ত ভাবে বাউন্ডারি দেওয়াল নির্মাণ করতে হবে।এবং লােকজনের যাতায়াতের জন্য শক্ত একটি গেট বানাতে হবে।
সাইট অফিস।
সাইট ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মকতাদের বসার জন্য একটি অস্থায়ী সাইট অফিস তৈরি করতে হবে। সেখানে কয়েকটি চিয়ার, টেবিল ও ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্টোর রুম।
সাইটের সকল প্রকার মালামাল রাখার জন্য ভাল মানের দরজা যুক্ত করে একটি ষ্টোর ঘর বানাতে হবে।
লেবার সেড।
সাইটে কাজের লোকদের থাকার জন্য একটা সেড তৈরি করতে হবে। সেটা অবশ্যই পানিরােধী হতে হবে।
সিকিউরিটি সেড।
সিকিউরিটিদের থাকার জন্য ভাল করে ঘর তৈরি করে দিতে হবে। আর এটা লেবারদের সেড থেকে দুরে করাই ভাল।
সাইট পরিষ্কার করা।
পুবাতন বিল্ডিং থাকলে ভাঙ্গার ব্যবস্থা করতে হবে। পুরাতন বিল্ডিং এর বেজ থাকলে তা তুলে সাইট পরিষ্কার করে ফেলতে হবে তা না করলে পাইলিং করা বা নতুন বেজ এর মাটি কাটার সময় ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে।
পানির ব্যবস্থা করা।
সাইটে পাইলিং করা, ঢালাই করা, লেবারদের গােছল করা, রান্ন করা থেকে শুরু করে সকল কাজে পানির প্রয়ােজন হবে। সে কারনেই সাইটে পানির সংযােগ নিতে হবে।
বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা।
সাইটে লাইটিং এর ব্যবস্থা করা ওয়েল্ডিং মেশিন চালানাে ও পাম্প মেশিন চালানাের জন্য বিদ্যুতের সংযােগ নিতে হবে।
গ্যাস সংযোেগ করা।
সাইটের লেবারদের রান্না করার প্রয়ােজনে গ্যাসের সংযােগ নিতে হবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে বিল্ডিং এ গ্যাসের প্রয়ােজনের কারণে গ্যাসের সংযােগ নিতে হবে।
সাইট সমতল করা।
লে-আউট দেওয়ার জন্য প্রজেক্টে বালি ফেলে সমতল করতে হবে।
ড্রয়িং ডিজাইন সংগ্রহ করা।
সব শেষে কাজ শুরু করার জন্য সকল প্রকার ড্রয়িং সংগ্রহ করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদের মান।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সনদের মান কত জন হয়তাে অনেকরই অজানা। তাদের মাঝে একটা সংকোচ আছে। ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারি সনদের মান এইচ এস সি সমমান নাকি ডিগ্রীর সমমান। তবে বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বাের্ডের সরকারি ওয়েব সাইট ঘুরে দেখা যায়। যে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের মান গ্রেড-১৪ আর এইচ এস সি এর মান গ্রেড মান -১২ এবং অনার্সের মান গ্রেড ১৬।এছাড়া এইচ এস সি কে দেখানাে হয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে আর ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কে দেখানাে হয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষা স্তরের মাঝামাঝি স্থানে।
চাকরি ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং।
একজন এইচ এসসি সনদধারী তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং তাকে সারাজীবন একই পদে চাকরি করে যেতে হয় অর্থাৎ তার কোন পদোন্নতি হয় না। আর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং তারা ক্রমে ক্রমে পদোন্নতি পেয়ে প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হতে পারেন। যা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত কাউকে পেতে হলে অন্ততপক্ষে মাস্টার্স অথবা বি সি এস ডিগ্রী ধারী হতে হয়।
আমরা যদি ডিপ্লোমা পড়ে আবার বিএসসি করি তবে জেনারেলদের চেয়ে আমাদেরকে দুই বছর বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। হ্যাঁ কথা সত্য। তবে এখানে আপনি দুটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী পাচ্ছেন। (ক) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী। (খ) বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী।
গ্রামে অনেকেই আছেন যারা, অনার্স-মাস্টার্স কমপ্লিট করেও টু টু করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিজের সম্মানটুকু বাচানাে যায় এমন একটা চাকরি পাচ্ছেন না। আর যিনি ডিপ্লোমা পড়েছেন তিনি পাশ করার দু-চার মাসের মাথায় একটা চাকরি পেয়ে যান। ৩ থেকে ৪ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এক জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বেতন পাচ্ছেন প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। এর পরেও কি বলবেন ডিপ্লোমা পড়া উচিত নয়। এছাড়া এক জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইন্টার পাশের মান দিয়ে যেকোন অফিসে চাকার করতে পারবে অথচ্য এক জন ইন্টার পাশ ব্যাক্তি কখনই ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি করতে পারবে না।
বি ,এস, সি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির জন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
√. Dhaka University of Engineering & Technology (DUET)
√.AMIE
এছাড়া আরো প্রযুক্তি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে পারে।আপনারা একটু গুগোলে সার্চ করে খুঁজলেই পাবেন। যেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোন করতে পারবেন।
বি ,এস, সি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া আরো অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থাকতে পারে।আপনারা একটু গুগোলে সার্চ করে খুঁজলেই পাবেন। যেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোন করতে পারবেন।
এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তির পূর্বে অবশ্যই শিক্ষার্থীর যোগ্যতা, অর্থনৈতিক সামর্থ্য, উদ্দেশ্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী সাবজেক্ট ও ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট করে ভর্তি হতে পারেন।
স্টুডেন্ট ভর্তির পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায় ও জীবন যাত্রা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে পারেন। এতে করে ভর্তির পর স্টুডেন্টকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না
Comments
Post a Comment